ছায়া হলো এটি এমন স্থান যেখানে আলোর উৎস থেকে আলো একটি অস্বচ্ছ বস্তু দ্বারা অবরুদ্ধ হয়। আলোর একটি অংশ বস্তু দ্বারা অবরুদ্ধ হওয়ার ফলে ছায়ার সৃষ্টি হয়। ছায়া বস্তুর আকার নেয়।

আলোর কাছে কোনো জিনিস রাখিলে সেই জিনিসটার একটা ছায়া পড়ে। তুমি রৌদ্রে গিয়া দাঁড়াও দেখিবে তোমার একটি ছায়া পড়িয়াছে। এই রকমে যে ছায়া হয়, তাহা তোমার কোন্‌দিকে দেখা যায়, লক্ষ্য করিয়াছ কি? তোমার যে দিকে সূর্য্য থাকে ঠিক তাহার উল্টা দিকে ছায়া পড়ে।
জগদানন্দ রায়
  • পাতলা ছায়া, ফোক্‌লা ছায়া, ছায়া গভীর কালো—
    গাছের চেয়ে গাছের ছায়া সব রকমেই ভালো।
    গাছ গাছালি শেকড় বাকল মিথ্যে সবাই গেলে,
    বাপ্‌ রে বলে পালায় ব্যামো ছায়ার ওষুধ খেলে।
    নিমের ছায়া ঝিঙের ছায়া তিক্ত ছায়ার পাক,
    যেই খাবে ভাই অঘোর ঘুমে ডাকবে তাহার নাক।
    • সুকুমার রায়, ছায়াবাজি, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী, প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩০
  • এই হিয়াভরা বেদনাতে, বারি-ছলোছলো আঁখিপাতে,
    ছায়া দোলে তারি ছায়া দোলে ছায়া দোলে দিবানিশি ধরি মরি মরি।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রেম, গীতবিতান- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ (১৪০০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৮৭
  • ফুল হীন, ফল হীন―জল হীন, ছায়া হীন আরব দেশ। সে দেশে নাই বসন্ত, ডাকেনা পাখী, নাচেনা ময়ূর ময়ুরী, তাই ফুটেনা ফুল;―কেবলি রোদ, কেবলি গ্রীষ্ম। সেখানে সহজে জল মিলে না, শস্যাদিও জন্মে না।
    • রাহাতুন্নেছা খাতুন, দেবী রাবিয়া, দেবী রাবিয়া - রাহাতুন্নেছা খাতুন, প্রকাশক- মকদুমী লাইব্রেরী, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩২১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১
  • যেদিন বুঝবে রূপটাও মানুষের ছায়া, মানুষ নয়—সেইদিনই শুধু ভালবাসার সন্ধান পাবে।
    • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, চরিত্রহীন - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- কামিনী প্রকাশালয়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০৫
  • আলোর কাছে কোনো জিনিস রাখিলে সেই জিনিসটার একটা ছায়া পড়ে। তুমি রৌদ্রে গিয়া দাঁড়াও দেখিবে তোমার একটি ছায়া পড়িয়াছে। এই রকমে যে ছায়া হয়, তাহা তোমার কোন্‌দিকে দেখা যায়, লক্ষ্য করিয়াছ কি? তোমার যে দিকে সূর্য্য থাকে ঠিক তাহার উল্টা দিকে ছায়া পড়ে।
    • জগদানন্দ রায়, চাঁদের গ্রহণ, গ্রহ-নক্ষত্র- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশস্থান- এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), প্রকাশসাল- ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮২
  • আপনার ছায়া লয়ে খেলা করে ফুলগুলি,
    এও সেই ছায়া-খেলা বসন্তের সমীরণে!
    কুহকের দেশে যেন সাধ ক'রে পথ ভুলি
    হেথা হোথা ঘুরি ফিরি সারাদিন আনমনে!
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গান রচনা, কড়ি ও কোমল-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশসাল- ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দ (১২৯৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২২০
  • মালিনীর জল বড়ো স্থির, আয়নার মত; তা’তে গাছের ছায়া, নীল আকাশের ছায়া, রাঙা মেঘের ছায়া, উড়ন্ত পাখীর ছায়া—সকলি দেখা যে’ত। আর দেখা যে’ত গাছের তলায় কতগুলি কুটিরের ছায়া।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শকুন্তলা - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিতীয় সংস্করণ, আদি ব্রাহ্মসমাজ সংস্করণ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০২ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১
  • দুই কিনারায় ফুলের ফসল, পর্‌ণে শাড়ী ফুল-পেড়ে,
    আমের ছায়া নিমের ছায়া এড়িয়ে আগে যাস্‌ বেড়ে;
    বসন্তে তোর ডাইনে বাঁয়ে ফুলের ধূলোট, ফুলের বান,
    মগজ ভরে মন হরে তোর সাত-আতরের ঐকতান!
    • সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, ঘুম্‌তী নদী, বিদায়-আরতি- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, চতুর্থ সংস্করণ, প্রকাশক- আর, এইচ, শ্রীমানী এণ্ড সন্স, কলকাতা, পৃষ্ঠা ৩
  • কখন তাহার ফল কি ফুল হয় নাই; কিন্তু তাহার ছায়া বড় শীতল ছিল। আমি সেই ছায়ায় বসিয়া “দুনিয়া” দেখিতাম। এই উচ্চ স্থানে বসিলে পাঁচ সাত ক্রোশ পর্য্যন্ত দেখা যাইত। দূরে চারি দিকে পাহাড়ের পরিখা, যেন সেইখানে পৃথিবীর শেষ হইয়া গিয়াছে। সেই পরিখার নিম্নে গাঢ় ছায়া, অল্প অন্ধকার বলিলেও বলা যায়। তাহার পর জঙ্গল।
    • সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, পালামৌ, তৃতীয় সংস্করণ, সম্পাদনা- ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সজনীকান্ত দাস, প্রকাশক- বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২১-২২
  • মহাকাশে পৃথিবী, চন্দ্র প্রভৃতি যে-সব গ্রহ-উপগ্রহ সূর্য্যকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে তাহাদের নিজের আলো নাই। কাজেই সূর্য্যের আলো তাহাদের এক পিঠে পড়িলে, উল্টা দিকে তাহাদের এক একটা প্রকাণ্ড ছায়া আকাশে পড়ে। এই ছায়াকে আমরা অবশ্য সর্ব্বদা দেখিতে পাই না, কারণ ছায়া যতই বড় হউক, কোনো জিনিসের উপরে না পড়িলে তাহা দেখা যায় না। কাজেই সূর্য্যের আলোতে পৃথিবীর ছায়া বা চাঁদের ছায়া সর্ব্বদা আকাশে থাকিলেও তাহা আমাদের নজরে পড়ে না। যখন তাহা আকাশের কোনো বড় জিনিসের উপরে পড়ে তখনই আমরা তাহা দেখিতে পাই।
    • জগদানন্দ রায়, চাঁদের গ্রহণ, গ্রহ-নক্ষত্র- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশস্থান- এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), প্রকাশসাল- ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৩
  • চিলগুলো যায় দুপুর বেলায় আকাশ পথে ঘুরে
    ফাঁদ ফেলে তার ছায়ার উপর খাঁচায় রাখি পুরে।
    কাগের ছায়া বগের ছায়া দেখ্‌‌ছি কত ঘেঁটে—
    হাল্কা মেঘের পান্‌‌সে ছায়া তাও দেখেছি চেটে।
    • সুকুমার রায়, ছায়াবাজি, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী, প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩০
  • তােমরা মানুষ, আর আমি ছায়া! বুঝিতে পারি না, ভগবান আমাকে তােমাদের এই সংসারের মাঝখানে কেন রাখিয়াছেন!
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবিত ও মৃত, তৃতীয় পরিচ্ছেদ, বিচিত্র গল্প - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিতীয় খণ্ড, প্রকাশসাল- ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩০১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩২

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা