বিশ্বাস
বিশ্বাস শব্দটি সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, জ্ঞানতত্ত্ব ইত্যাদি বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে খানিকটা আলাদা অর্থ বহন করে। তাই জ্ঞান , সত্য ইত্যাদির মত বিশ্বাসেরও কোনো একটি সর্বজনসম্মত সংজ্ঞা নেই বলে অনেকের ধারণা। বিশ্বাস মানে হতে পারে আস্থা, ভরসা। বিশ্বাস হতে পারে কোন বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ অনুভূতির সচেতন অনুধাবন; বা কোনো তথ্য বোধগম্য হওয়া। আবার বিশ্বাস হতে পারে কোন জনতার সম্মিলিত জনমত। যেমন নানা ধরনের ধর্মবিশ্বাস। বিশ্বাসের সঙ্গে মূল্যবোধ ও ভালোমন্দ বিচারও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কোন কিছুকে ভালো বলে বিশ্বাস না হলে তাকে খারাপ বলেই সন্দেহ হবে। প্রতিনিধিত্ববাদ মানসিক প্রতিনিধিত্বের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বাসকে চিহ্নিত করে। আবার কার্যপ্রণালীবাদ বিশ্বাসকে সংজ্ঞায়িত করে মনের অভ্যন্তরীণ সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে নয় বরং তাদের দ্বারা পরিচালিত কার্য বা কার্যকারণ ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে। ব্যাখ্যাবাদ অনুসারে, একটি সত্তার বিশ্বাস কিছু অর্থে এই সত্তার কারো ব্যাখ্যার উপর নির্ভরশীল বা আপেক্ষিক।
উক্তি
সম্পাদনা- আমাদের অসীম শক্তি আছে—নাই আমাদের আত্ম-বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা। নিজের উপর, নিজের জাতির উপর বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা ফিরাইয়া আনিতে হইবে। দেশবাসীকে অন্তরের সঙ্গে ভালবাসিতে হইবে। মানুষ অন্তরের সহিত যাহা আকাঙ্ক্ষা করে তাহা একদিন পাইবেই পাইবে।
- সুভাষচন্দ্র বসু।
- নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১১
- সুভাষচন্দ্র বসু।
- রুক্ষ বচন যতই আঘাত হানে
সকল আঘাতে তব সুর উঠে জাগিয়া।
শত বিশ্বাস ভেঙে যদি যায় প্রাণে
এক বিশ্বাসে রহে যেন মন লাগিয়া।- নৈবেদ্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১২
- নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস,
‘ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।’
নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে,
কহে, ‘যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে।’- কণিকা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৮
- বিশ্বাস সংসার থেকে লুপ্ত হয়নি, হবে না। সত্যের উপর বিশ্বাস রাখা প্রত্যেক মানুষের ধর্ম। যে মানুষের মন থেকে বিশ্বাস চলে গেছে তাকে মৃত বলে মনে করা উচিত।
- মুন্সি প্রেমচাঁদ, ব্যাঙ্ক-দেউলে, প্রেমচন্দ গল্পসংগ্রহ- প্রেমচন্দ, প্রকাশক- পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশসাল- নভেম্বর ২০০১, পৃষ্ঠা ৭৪