পাপ হলো যে কোন ধরনের মন্দ কর্ম। নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে এটি হলো এক বা একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কৃত কোন মন্দ আচরণ। আব্রাহামিক ধর্মসমূহে, যেমন খ্রিস্টধর্মে এবং ইহুদি ধর্মে, এটি হল এমন কোন কাজ যেটি ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যায়। ইসলাম ধর্মে একে গুনাহ বলে উত্থাপণ করা হয়। এটি মানুষকে ঈশ্বর এবং সত্যিকারের সুখ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

  • সংযত মনই সুখ আনয়ন করে। পাপ ও পুণ্য সমস্তই তোমার নিজকৃত। অন্য কেহ তোমাকে পবিত্র করিতে পারিবে না।
    • গৌতম বুদ্ধ, বুদ্ধের জীবন ও বাণী- শরৎকুমার রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩২১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৮
  • মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ, সে বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করব। আশা করব, মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে। আর-একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রার অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাবার পথে। মনুষ্যত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভবকে চরম বলে বিশ্বাস করাকে আমি অপমান মনে করি।
  • হেথা সবে সম পাপী
    আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি!
    • কাজী নজরুল ইসলাম, ‘পাপ’ কবিতা, ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ, নজরুল-রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, দ্বিতীয় খণ্ড, প্রকাশক- বাংলা একাডেমী, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৮৪
  • দানবের দল হাসে খল খল, হেরি’ তার পরাজয়—
    যে-প্রেম তাহারা ভুঞ্জিতে নারে, তারে তারা পাপ কয়
    যে-মরণ তারা মরিতে জানে না, তাহারে গরল বলে!
    জানে না, গরল নীল হ’য়ে আছে মৃত্যুজিতের গলে!
    • মোহিতলাল মজুমদার, পাপ, মোহিতলাল-কাব্যসম্ভার -মোহিতলাল মজুমদার, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, কলিকাতা, প্রকাশসাল- আষাঢ় ১৩৬৭ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা ৪৬
  • জ্ঞান ও প্রেম উভয়ই আমাদের মনুষ্যজীবনে সাধনার বস্তু। প্রেম প্রথম স্তর। প্রেম মানুষকে জ্ঞানেতে পৌঁছাইয়া দেয়। প্রেম প্লাবন আনে, সেই প্লাবনে হৃদয়ের সঙ্কীর্ণতা ও পাপ মলিনতা ধুইয়া হৃদয়কে পবিত্র করে ও জ্ঞানসাগরে মিশিয়া যায়।
    • ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী, আমার খাতা - ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী, প্রকাশক-শ্রীব্রজেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৮
  • পাপিগণে আজ কাঁদিছে চরণে, এসো এসো দয়াল,
    হও হে উদয়, জাগায়ে হৃদয়, কাটিয়ে মোহজাল।
    তোমার প্রকাশে, পাপ-তাপ নাশে, ঘুচায় যাতনা;
    মরণ-মাঝারে জীবন সঞ্চারে, আনে হে চেতনা।
    • শিবনাথ শাস্ত্রী, ব্রহ্মসঙ্গীত, ত্রয়োদশ সংস্করণ, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ, কলিকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দ, গান সংখ্যা ৭১৩, পৃষ্ঠা ৩৪৪
  • মানুষ তো নিজের অজান্তে ও অনেক জঘন্য অপরাধ করে বসে। সমস্ত ধর্মতো পাপ বোধের ওপরই প্রতিষ্ঠিত। যেহেতু মানুষ হিসাবে তোমাকে জন্ম নিতে হয়েছে তাই, তুমি পাপী !
    • আহমদ ছফা, অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী, পৃঃ৪০
  • জীবনে এসেছে যত রজনী প্রভাত
    ভুলেছি কি তুমি এসে ধর নাই হাত?
    পতিত, লাঞ্ছিত, ভীত, নিরাশ্রয় জন
    সেও জানে একমাত্র তুমিই শরণ—।
    সর্ব পাপ, সর্ব তাপ করিতে হরণ
    অন্তরে রয়েছ তার ওগো চিরন্তন।
    • কুসুমকুমারী দাশ, চিরন্তন-কুসুমকুমারী দাশ, ব্রহ্মবাদী, ২৪শ বর্ষ, ৭ম সংখ্যা, কার্তিক ১৩৩০
  • হুতাশনের দাহন-আশা, ধরণীর জলশোষণ-আশা, ভিখারীর অর্থলোভ-আশা, চক্ষুর দর্শন-আশা, গাভীর তৃণভক্ষণ-আশা, ধনীর ধনবৃদ্ধির আশা, প্রেমিকের প্রেমের আশা, সম্রাটের রাজ-বিস্তারের আশার যেমন নিবৃত্তি নাই, হিংসাপূর্ণ পাপ-হৃদয়ে দুরাশারও তেমনি নিবৃত্তি নাই—ইতি নাই। যতই কার্য্যসিদ্ধি, ততই দুরাশার শ্রীবৃদ্ধি।
  • অস্পৃশ্যতা পাপ হিন্দু ভারতবর্ষ ব্যতীত কোথাও পাবেন না।
    • প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, ঘর সামলাও, আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী, লেখক- প্রফুল্লচন্দ্র রায়, প্রকাশক-চক্রবর্তী চ্যাটার্জি এণ্ড কোম্পানি লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৪৫
  • মনে-জ্ঞানে যে কাজে দোষ দেখব না, পাপ দেখব না, সে কাজে নিন্দের ভয় করব কেন? নিন্দে সুখ্যাতির ভয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকাটাও তো এক রকম স্বার্থপরতা।
    • আশাপূর্ণা দেবী, প্রথম প্রতিশ্রুতি- আশাপূর্ণা দেবী, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলিকাতা, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৯৬৫, পৃষ্ঠা ৩৬৩
  • গভীর অরণ্যে এক সন্ন্যাসী দস্যু রত্নাকরকে বলেছিলেন ডাকাতি তো করছো; তোমার পাপের ভাগী কে হবে? বউ? ছেলে? মেয়ে? বাবা? মা? কেউ না। রত্নাকর যাচাই করতে গিয়ে দেখেছিল সেটাই সত্যিই। মিথ্যে কথা। পাপের ভাগ সবাইকেই নিতে হয় বৈকি। মা, বাবা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা